Types of Network (নেটওয়ার্কের ধরনসমূহ)
-
- LAN (Local Area Network):
-
- MAN (Metropolitan Area Network):
-
- WAN (Wide Area Network):
-
- PAN (Personal Area Network):
-
- CAN (Campus Area Network):
-
- SAN (Storage Area Network):
-
- VPN (Virtual Private Network):
1. LAN (Local Area Network):
ধরুন, একটি অফিসে ২০ জন কর্মচারী কাজ করছে। তাদের প্রত্যেকের আলাদা কম্পিউটার আছে, সাথে আছে একটি সার্ভার এবং প্রিন্টার। এই অফিসের ভেতরে সব কম্পিউটার একসাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে, এটিই হলো LAN। বাংলাদেশে উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়—যেকোনো প্রাইভেট অফিস যেমন ব্র্যাক ব্যাংক বা গ্রামীণফোনের কর্পোরেট অফিসে ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক। LAN ব্যবহার করে তারা দ্রুত ফাইল শেয়ার করে, প্রিন্টার ব্যবহার করে এবং অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ চালায়। তবে LAN সাধারণত শুধু নির্দিষ্ট অফিস বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাইরে থেকে কেউ অ্যাক্সেস করতে চাইলে আলাদা সেটআপ লাগবে।
2. MAN (Metropolitan Area Network):
ভাবুন, পুরো ঢাকার বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান একসাথে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব LAN আছে, কিন্তু সব LAN একত্র হয়ে শহরজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে—এটিই MAN। বাংলাদেশে উদাহরণ হলো—ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ইন্টারনেট সংযুক্তি বা বিটিসিএল (BTCL)-এর মেট্রো-ফাইবার নেটওয়ার্ক। এসব নেটওয়ার্ক শহরের বিভিন্ন অফিসকে একত্রে যুক্ত করে। তবে MAN-এর খরচ অনেক বেশি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জটিল।
3. WAN (Wide Area Network):
এবার কল্পনা করুন, শুধু ঢাকা নয়, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল এমনকি বিদেশের সাথেও যোগাযোগ করার দরকার পড়লো। তখন ব্যবহৃত হয় WAN। WAN হলো সেই বিশাল নেটওয়ার্ক, যা দেশ ও দেশের বাইরের সব জায়গাকে যুক্ত করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো—ইন্টারনেট নিজেই, যা সাবমেরিন কেবল (SEA-ME-WE 4, SEA-ME-WE 5) দিয়ে যুক্ত। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক যখন বিদেশের ব্যাংকের সাথে টাকা লেনদেন করে, তখনও WAN ব্যবহার করে। তবে WAN-এ সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল।
4. PAN (Personal Area Network):
ভাবুন, একজন ছাত্র তার ল্যাপটপে পড়াশোনা করছে। একই সময়ে সে ব্লুটুথ হেডফোনে গান শুনছে, আবার মোবাইল থেকে ল্যাপটপে ফাইল পাঠাচ্ছে। এই যে এক ব্যক্তির চারপাশে ছোট্ট পরিসরে নেটওয়ার্ক তৈরি হলো, এটিই PAN। বাংলাদেশে প্রতিদিনের জীবনেই PAN ব্যবহার হয়। উদাহরণস্বরূপ—ঢাবি বা বুয়েটের ছাত্ররা মোবাইল, ল্যাপটপ, স্মার্টওয়াচ বা হেডফোন ব্লুটুথ/ওয়াইফাই হটস্পট দিয়ে যুক্ত করছে। এটি সস্তা এবং সহজ, তবে দূরত্ব খুব সীমিত হওয়ায় এর ব্যবহার ছোট স্কোপেই সীমাবদ্ধ।
5. CAN (Campus Area Network):
ধরুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট আছে। প্রতিটি ভবনের নিজস্ব LAN আছে, কিন্তু সবগুলো LAN একত্র হয়ে একটি বড় নেটওয়ার্ক গঠন করেছে। এটিই হলো CAN। বাংলাদেশে উদাহরণ হলো—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক। যেখানে শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা একই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করে, লাইব্রেরির ডাটাবেজ অ্যাক্সেস করে বা অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে। তবে CAN তৈরি করতে অনেক খরচ হয় এবং টেকনিক্যাল টিম ছাড়া এটি চালানো কঠিন।
6. SAN (Storage Area Network):
ধরুন, একটি ব্যাংক বা মোবাইল কোম্পানির কোটি কোটি গ্রাহকের তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। শুধু সংরক্ষণ করলেই হবে না, তথ্য দ্রুত ও নিরাপদভাবে ব্যবহার করাও দরকার। এই জন্য ব্যবহৃত হয় SAN। বাংলাদেশে উদাহরণ হলো—বাংলাদেশ ব্যাংক, বিকাশ বা রবি-গ্রামীণফোনের ডেটা সেন্টার। তারা তাদের গ্রাহকের লেনদেন ও তথ্য সংরক্ষণ করে SAN এর মাধ্যমে। SAN অত্যন্ত শক্তিশালী ও নিরাপদ, কিন্তু এটি তৈরি করা অনেক ব্যয়বহুল এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ আইটি টিম লাগে।
7. VPN (Virtual Private Network):
সবশেষে আসে VPN। VPN কোনো আলাদা ফিজিক্যাল নেটওয়ার্ক নয়, বরং ইন্টারনেটের ভেতরে একটি নিরাপদ টানেল তৈরি করে। বাংলাদেশে উদাহরণ হলো—যখন কোনো অফিস কর্মী বাসা থেকে অফিসের সার্ভারে নিরাপদে লগইন করেন বা কেউ ব্লকড ওয়েবসাইট (যেমন কোনো গবেষণা সাইট বা বিদেশি জার্নাল) অ্যাক্সেস করেন। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন আইটি কোম্পানি বা ফ্রিল্যান্সাররা ক্লায়েন্টের ডেটা সুরক্ষার জন্য VPN ব্যবহার করেন। তবে ফ্রি VPN ব্যবহার করলে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে এবং অনেক সময় গতি কমে যায়।
এভাবে প্রতিটি নেটওয়ার্কের আলাদা আলাদা দুনিয়া আছে। ছোট্ট ঘরের ভেতরে LAN, শহরজুড়ে MAN, পৃথিবীজুড়ে WAN, ব্যক্তিগত ব্যবহারে PAN, ক্যাম্পাসের মধ্যে CAN, ডেটা সংরক্ষণের জন্য SAN এবং নিরাপদ পথে যোগাযোগের জন্য VPN। এগুলো একসাথে মিলে আজকের পৃথিবীকে করেছে সত্যিকারের ডিজিটাল গ্রাম, যেখানে আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে সংযুক্ত।