🌐 OSI Model (Open Systems Interconnection Model) কী?
ধরো তুমি তোমার বন্ধুকে একটা চিঠি পাঠাতে চাইছো। চিঠিটা তোমার হাত থেকে তোমার বন্ধুর হাতে পৌঁছানোর আগে অনেক ধাপ পেরিয়ে যায় – যেমন লিখা, খাম ভরা, পোস্ট অফিসে দেওয়া, ট্রেনে যাওয়া, ডেলিভারি বয়ের হাতে যাওয়া, শেষে তোমার বন্ধুর হাতে পৌঁছানো।
একইভাবে, কম্পিউটার নেটওয়ার্কে তথ্য (ডেটা) পাঠানোর সময়ও অনেকগুলো ধাপ/স্তর পার হয়। এই ধাপগুলোকে ৭টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যাকে বলে OSI Model।
👉 সহজভাবে: OSI Model = নেটওয়ার্কে ডেটা কীভাবে এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে পৌঁছায়, তার ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা।
📚 OSI Model-এর ৭টি লেয়ার (Layer)
1. Physical Layer (তারের স্তর)
ধরো রাস্তা বানানো হচ্ছে। রাস্তা না থাকলে তো গাড়ি চলবে না।
কাজ: ডেটা কীভাবে আসল তার, ওয়্যারলেস সিগনাল, ইলেকট্রিক্যাল সিগনালের মাধ্যমে যাবে সেটা নির্ধারণ করে।
উদাহরণ: Ethernet cable, Wi-Fi, Hubs, Repeaters.
2. Data Link Layer (সংযোগের স্তর)
রাস্তা তৈরি হলো, এবার প্রতিটা গাড়িতে নাম্বার প্লেট লাগাতে হবে, যাতে বোঝা যায় কার গাড়ি কার।
কাজ: এক কম্পিউটার থেকে আরেক কম্পিউটারে ডেটা সঠিকভাবে পৌঁছাতে সাহায্য করে। MAC address ব্যবহার করে।
উদাহরণ: Switch, Network card (NIC).
3. Network Layer (ঠিকানার স্তর)
এখন তোমাকে চিঠি অন্য শহরে পাঠাতে হবে। এর জন্য সঠিক ঠিকানা (IP address) লাগবে।
কাজ: ডেটাকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দিতে IP address ব্যবহার করে। রাউটিং করে।
উদাহরণ: Routers, IP Address (IPv4/IPv6).
4. Transport Layer (পরিবহনের স্তর)
তুমি চিঠি পাঠালে, কিন্তু নিশ্চিত হতে হবে যে বন্ধুর হাতে চিঠি আসলেই পৌঁছেছে।
কাজ: ডেটাকে ছোট ছোট টুকরো (segments) করে পাঠায় এবং সঠিকভাবে পৌঁছেছে কিনা সেটা যাচাই করে।
প্রোটোকল: TCP (বিশ্বাসযোগ্য), UDP (দ্রুত কিন্তু কম নির্ভরযোগ্য)।
5. Session Layer (সেশন বা আলাপের স্তর)
তুমি আর তোমার বন্ধু ফোনে কথা বলছো। কথা শুরু হলে একটা সেশন শুরু হয়, আর শেষ হলে সেশন শেষ।
কাজ: দুই কম্পিউটারের মধ্যে যোগাযোগের সময় সেশন তৈরি ও শেষ করা।
উদাহরণ: Online banking session, Video call session.
6. Presentation Layer (উপস্থাপনের স্তর)
ধরো তুমি ইংরেজিতে চিঠি লিখেছো, কিন্তু তোমার বন্ধু বাংলা জানে। এখন সেই চিঠিকে অনুবাদ করতে হবে।
কাজ: ডেটাকে বুঝতে সহজ করে তোলে। ডেটা এনক্রিপ্ট, ডিক্রিপ্ট, কমপ্রেস করে।
উদাহরণ: SSL/TLS encryption, JPEG, MP3 formats.
7. Application Layer (অ্যাপ্লিকেশনের স্তর)
অবশেষে তোমার বন্ধু খাম খুলে আসল চিঠি পড়ছে।
কাজ: ইউজারকে সরাসরি সার্ভিস দেয়। আমরা যেসব অ্যাপ ব্যবহার করি তার সাথে এই লেয়ার কাজ করে।
উদাহরণ: Web browser (HTTP/HTTPS), Email (SMTP), File Transfer (FTP)।
🎯 OSI Model-এর সারসংক্ষেপ
লেয়ার কাজ উদাহরণ Application ইউজারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ HTTP, FTP, SMTP Presentation ডেটা এনক্রিপশন, কমপ্রেশন SSL/TLS, JPEG, MP3 Session সেশন তৈরি ও ম্যানেজ Video call, Online banking Transport ডেটা ভেঙে পাঠানো, রিলায়েবল ডেলিভারি TCP, UDP Network IP ঠিকানা, রাউটিং Router, IP address Data Link MAC address, ফ্রেমিং Switch, NIC Physical আসল তার/সিগনাল Cables, Hub, Wi-Fi
🧠 মনে রাখার সহজ কৌশল
"Please Do Not Throw Sausage Pizza Away" (প্রথম অক্ষর দিয়ে ৭টা লেয়ার মনে রাখা যায়):
P = Physical
D = Data Link
N = Network
T = Transport
S = Session
P = Presentation
A = Application
📦 ডেটার ভ্রমণ: Sender → Receiver
ধরো তুমি (Sender) তোমার বন্ধুকে (Receiver) একটা মেসেজ পাঠাচ্ছো — “Hello”
OSI Model-এ ডেটা নিচের মতো ভ্রমণ করে 👇
🔽 Sender Side (তোমার থেকে বের হচ্ছে)
Application Layer 👉 তুমি ব্রাউজার/অ্যাপ ব্যবহার করে লিখলে "Hello"।
Presentation Layer 👉 ডেটা হয়তো এনক্রিপ্ট হলো (HTTPS), কমপ্রেস হলো।
Session Layer 👉 ব্রাউজার আর সার্ভারের মধ্যে সেশন ওপেন হলো।
Transport Layer 👉 "Hello" শব্দটাকে টুকরো টুকরো সেগমেন্ট বানানো হলো। TCP চেক করল সব পৌঁছাবে কিনা।
Network Layer 👉 প্রতিটি টুকরোতে তোমার IP Address (Sender IP) আর তোমার বন্ধুর IP Address (Receiver IP) লাগানো হলো।
Data Link Layer 👉 এখানে প্রতিটি ফ্রেমে MAC Address যোগ হলো, যাতে লোকাল নেটওয়ার্ক চিনতে পারে।
Physical Layer 👉 অবশেষে ডেটা শূন্য-এক (0,1) আকারে ইলেকট্রিক সিগন্যাল/ওয়্যারলেস সিগন্যাল হয়ে তার/ওয়াই-ফাই দিয়ে বের হলো।
🔼 Receiver Side (তোমার বন্ধুর কাছে পৌঁছাচ্ছে)
ডেটা এবার উল্টো পথে ওঠে:
Physical Layer 👉 সিগন্যাল তার বা ওয়াই-ফাই দিয়ে বন্ধুর কম্পিউটারে ঢুকলো।
Data Link Layer 👉 ফ্রেম থেকে MAC Address পড়ে বুঝল সঠিক ডিভাইসে এসেছে।
Network Layer 👉 IP Address দেখে চেক করল সঠিক গন্তব্য (Receiver IP)।
Transport Layer 👉 সব টুকরো সেগমেন্ট আবার জোড়া লাগিয়ে “Hello” বানাল। TCP নিশ্চিত করল কোনটাও হারায়নি।
Session Layer 👉 সেশন ভেতরে ডেটা হস্তান্তর হলো।
Presentation Layer 👉 যদি এনক্রিপ্টেড থাকে, সেটা ডিক্রিপ্ট হলো (যেমন HTTPS)।
Application Layer 👉 অবশেষে তোমার বন্ধু ব্রাউজারে/অ্যাপে “Hello” দেখতে পেল। 🎉
🔁 Receiver → Sender Flow
এবার তোমার বন্ধু যদি রিপ্লাই দেয় “Hi”, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় সেটা উল্টো দিক দিয়ে চলবে। অর্থাৎ Receiver তখন Sender হয়ে যাবে, আর ডেটা আবার Application → Presentation → Session → Transport → Network → Data Link → Physical দিয়ে নামবে, তারপর তোমার কাছে এসে Physical → Data Link → Network → Transport → Session → Presentation → Application দিয়ে উঠবে।
🖼️ ভিজ্যুয়াল কনসেপ্ট (একটা লেয়ার বাই লেয়ার গ্রাফ)
Sender Receiver
Application ---> "Hello" ---> Application Presentation ---> Encode ---> Presentation (Decode) Session ---> Session ---> Session Transport ---> Segments ---> Transport (Reassemble) Network ---> IP addr ---> Network (Check addr) Data Link ---> MAC addr ---> Data Link (Frame check) Physical ---> Bits ---> Physical (Signals)
🌟 সংক্ষেপে:
Sender সাইডে ডেটা উপরে থেকে নিচে নামে।
Receiver সাইডে ডেটা নিচ থেকে উপরে ওঠে।
এই উল্টো–সিধে প্রক্রিয়াই OSI Model কে এত সুন্দর করে কাজ করতে সাহায্য করে।